স্টাফ রিপোর্টার :
বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিনের শেষ বিদায়ে আসন্ন বন্দর উপজেলা নির্বাচনে বেকায়দায় পড়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী এম.এ রশিদ। শুরুতে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষন করলেও পরবর্তীতে এমপি সেলিম ওসামনের মধ্যস্ততায় তিনি নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে এম.এ রশিদকে সমর্থন দিয়ে তার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করেছিলেন।
এম.এ রশিদ নির্বাচনী মাঠে নামার পর সবশেষ গত ৭ এপ্রিল পর্যন্ত এম.এ রশিদের পক্ষে যে কয়েকটা নির্বাচনী সভা ও উঠান বৈঠক হয়ে ছিলো তার সবকটিই আয়োজন করে ছিলেন কাজিম উদ্দিন প্রধান। কারন এম.এ রশিদ বিনা প্রতিদ্ব›দ্ধীতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীদের সাথে তেমন কোন যোগাযোগই রাখেননি। এমনটাই অভিযোগ তৃনমূল আওয়ামী লীগের কর্মীদের। তাই এম.এ রশিদ আওয়ামী লীগের কর্মীদের কাছ থেকে কোন রকম সাড়া পাচ্ছিলনা। এমতাবস্থায় কর্মীদের একত্রিত করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান সেই দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়ে ছিলেন। তিনি কর্মীদের মান অভিমান ভাঙ্গিয়ে এম.এ রশিদের জন্য কাজ করতে একত্রিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে নির্বাচনে কাজ করতে গিয়ে কর্মীদের সার্বিক সহযোগীতা করে যাচ্ছিলেন।
সব শেষ ৭এপ্রিল কাজিম উদ্দিনের উদ্যোগে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এম.এ রশিদের পক্ষে নির্বাচনী বৈঠক করে ছিলেন কাজিম উদ্দিন প্রধান। যেখানে তিনি ঘোষণা দিয়ে ছিলেন এম.এ রশিদকে নির্বাচনে বিজয়ী করতে যেখানে যা করতে হবে তার সবটা তিনি নিজেই করবেন।
কিন্তু ৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে কাজিম উদ্দিন প্রধান চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তাঁর এমন অসময়ে বিদায়ে বন্দর থানা আওয়ামী লীগ যেমন সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়েছে তেমনি বেকায়দায় পড়েছেন আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এম.এ রশিদ।
কাজিম উদ্দিনের মৃত্যুর পর বন্দরে আওয়ামী লীগের একটি অংশ অন্তরালে থেকে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকলের পক্ষে কাজ করছেন বলেও বন্দরে গুঞ্জন রয়েছে।
এছাড়াও ধামগড় ও মদনপুর ইউনিয়ন এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি অংশ প্রকাশ্যে নিজ দলীয় প্রার্থীকে বর্জন করে মুছাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে উঠান বৈঠক করিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে ধামগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে বহিস্কৃত সিরাজ উদ্দিন এবং মদনপুর ইউনিয়নে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি আরজু ভুইয়ার ভাতিজা অ্যাডভোকেট মামুন এর নাম উল্লেখ যোগ্য। অথচ গত দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এম.এ রশিদ আরজু ভুইয়াকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে দলীয় প্রার্থী এম.এ সালামকে ঠেকানোর চেষ্টা করে ছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে কাজিম উদ্দিন প্রধান ছিলেন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন এলাকার সেখানে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক সহ নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিলো। উপজেলার সব থেকে বড় এবং বেশি ভোটার সংখ্যা এই কলাগাছিয়া ইউনিয়নেই। এই একটি ইউনিয়নের ভোট পাল্টে দিতে পারে উপজেলা নির্বাচনের সকল হিসেব নিকেশ। প্রয়াত কাজিম উদ্দিন প্রধান আসন্ন নির্বাচনে এম.এ রশিদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়াতে ওই ইউনিয়নে তার জন্য সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি হয়ে ছিলো। কিন্তু তার মৃত্যুতে সেই ইউনিয়ন এলাকায় অপর প্রার্থী মাকসুদ হোসেন আরো শক্তভাবে ঘাটি গাড়তে শুরু করেছে। সব দিক মিলিয়ে কাজিম উদ্দিনের না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় আসন্ন নির্বাচনে বেগ পেতে হবে চেয়ারম্যান প্রার্থী এম.এ রশিদকে।